আর. বনাম ডুডলি এবং স্টিফেনস

R v Dudley and Stephens CaseFeature Phot BN

আর. বনাম ডুডলি এবং স্টিফেনস

রেফারেন্স : 14 QBD 273, DC

জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদ্বয় :

  1. রিচার্ড পার্কার – ভুক্তভোগী কেবিন বালক (17 বছর)
  2. টম ডুডলি – (ক্যাপ্টেন)
  3. এডউইন স্টিফেনস – (ক্রু সদস্য)
  4. এডমন্ড ব্রুকস – (নাবিক)

ঘটনা :

১৮৮৪ সালে, ক্যাপ্টেন থমাস ডুডলি একটি প্রমোদ তরী নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড ত্যাগ করেন। ০৫ জুলাই, প্রমোদতরীটি সামুদ্রিক ঢেউয়ের কবলে পড়ে এবং ‘ক্যাপ অব গুড হোপ’ নামক স্থানে ডুবে যায়। ডুবন্ত জাহাজ থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী লাইফবোটে তোলার জন্য জাহাজের চারজন সদস্যদের নিকট পর্যাপ্ত সময় ছিল না, তারা মাত্র দুটি শালগমের ক্যান নিতে পেরেছিলো। তারা শালগম ও সামুদ্রিক কচ্ছপ খেয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় অতিবাহিত করে। পান করার জন্য প্রয়োজনীয় বৃষ্টির পানিও তারা সংগ্রহ করতে পারছিলো না। ক্ষুধার্ত ও খাবার না থাকায় তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। সামুদ্রিক লোনা পানি পান করায় পার্কার (কেবিন বালক) কোমায় চলে যায় (সম্ভাব্য)। খাবার পানি না থাকায় বাকি সদস্যরাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে ডুডলি বলে, বাকি সদ্যদের বাঁচার জন্য, যেকোনো একজনের মৃত্যুবরণ করা উচিত। ব্রুকস এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে ডুডলি স্ট্রিফেনকে একই প্রস্তাব দেয় এবং অসুস্থ পার্কারের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলে জানায়। স্ট্রিফেনস ডুডলির প্রস্তাব গ্রহণ করে তারা পার্কারকে হত্যা করে। পার্কারের মৃতদেহ খেয়ে তারা ০৪ দিন অতিবাহিত করে। পরে বাকি তিন সদস্যকে উদ্ধার করা হয়।

সিদ্ধান্ত :

বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন সময় অভিযুক্তরা নিজেদের দোষ স্বীকার করে এবং বলে তারা কাজটি নিজেদের জীবনরক্ষার্থে করেছিলো। তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করে, অসুস্থ পার্কারের সুস্থ হওয়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না। পার্কার কোমায় চলে গিয়েছিল। তাই, তাকে হত্যা করার মাধ্যমে বাকি তিনজন নিজেদের জীবন বাঁচানো চেষ্টা করেছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘কুইন’স বেঞ্চ’ এর বিচারকগণ বলেন, ❝আইন এর থেকে নৈতিকতার চরম বিচ্ছিন্নতার পরিণতি ভয়াবহ❞। বিচারকগণ আরো উল্লেখ করেন, “যদি সত্যিই প্রয়োজনের তাগিদে হত্যা করা হয়ে থাকে, তাহলে ডুডলি নিজেকেই আত্মোৎসর্গ করতে পারতো কিন্তু তিনি তা করেন নি। বরং, তিনি পার্কারকে হত্যা করেছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, হত্যা মামলার ক্ষেত্রে ‘Doctrine of Necessity’ কখনই আত্মরক্ষার পদ্ধতি হতে পারে না।”
ডুডলি এবং স্টেফিনসকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাদের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শনপূর্বক সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।


অনুবাদক :
১. ফাহিম আহমেদ
২. মো. আতিকুর রহমান

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ

Share