ফেয়ারচাইল্ড বনাম গ্লেনহেভেন ফিউনারেল সার্ভিসেস লিমিটেড এবং অন্যান্য
রেফারেন্স : [2003] 1 AC 32
জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড
বাদী : ফেয়ারচাইল্ড
বিবাদী : গ্লেনহেভেন ফিউনারেল সার্ভিসেস লিমিটেড
ঘটনা :
একাধিক প্রতিষ্ঠানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কর্মরত অবস্থায় অ্যাসবেস্টস ধূলিকণার সংস্পর্শে থাকার ফলস্বরূপ তিনজন ভুক্তভোগী মেসোথেলিওমা-য় (শরীরের অভ্যন্তরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সংঘটিত এক ধরনের ক্যান্সার) আক্রান্ত হন। চিকিৎসকের তথ্যানুযায়ী, মেসোথেলিওমায় আক্রান্ত হওয়ার জন্য একবার অ্যাসবেস্টস ধূলার সংস্পর্শই যথেষ্ট। ফলে, এটি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ভুক্তভোগীরা অ্যাসবেস্টসের সংস্পর্শ থেকেই মেসোথেলিওমায় আক্রান্ত হয়েছেন কিন্তু কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকা অবস্থায় তারা আক্রান্ত হয়েছেন সে বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করে নির্ণয় করা যায়নি। নির্দিষ্টভাবে কোন নিয়োগকর্তার অধীনে থাকা অবস্থায় রোগটি সংক্রমিত হয়েছিল তা শনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায়, আপিল আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে হাউস অব লর্ডস আপিল আদালতের এ সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করেন।
ইস্যু : ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের মেসোথেলিওমা-য় আক্রান্ত হওয়ার জন্য সুনিদির্ষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান দায়ী ছিল কি না?
সিদ্ধান্ত :
কোর্ট অব আপিল :
আপিল আদালত “ওয়েলশার বনাম এসেক্স এরিয়া হেলথ অথরিটি” মামলায় ব্যবহৃত ❝বাট ফর টেস্ট❞ এই মামলায় প্রয়োগ করেন, যদিও উক্ত প্রয়োগ যথার্থ ছিল না। ফলশ্রুতিতে, ভুক্তভোগীর ক্ষতির জন্য কোন নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার দায়বদ্ধ পাওয়া যায় না। এর প্রেক্ষিতে, আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।
হাউস অব লর্ডস
হাউস অব লর্ডস রায়ে উল্লেখ করেন যে, মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে মেসোথেলিওমা রোগের সংক্রমণস্থল হিসেবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে এটি স্পষ্ট যে, প্রতিটি কর্মস্থলের অ্যাসবেস্টস ধূলিকণার সংস্পর্শ এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। তাই, অভিযুক্ত বিবাদীগণ উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ক্ষতি প্রতিরোধ করতে পারতেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ‘Materially Increase of Risk‘ পরীক্ষা বেছে নেন, যেখানে বলা হয়েছে: ❝অভিযুক্তের কার্যক্রম ভুক্তভোগীর ক্ষতির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে সহায়তা করেছে।❞ উক্ত পরীক্ষাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল “ম্যাকঘি বনাম জাতীয় কয়লা বোর্ড” মামলায়।
সর্বশেষ, হাউস অব লর্ডস রায় ঘোষণা করেন যে, সকল প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তাই পর্যাপ্ত সতর্কতা গ্রহণে অবহেলা করেছে যা মামলাকারীদের মেসোথেলিওমায় আক্রান্তের ঝুঁকি বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্যভাবে ভূমিকা রেখেছে। সুতরাং, সকল প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তাগণ ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য।
ফেয়ারচাইল্ড নীতি :
এই মামলার মাধ্যমে ❝ফেয়ারচাইল্ড নীতি❞ প্রতিষ্ঠা লাভ করে, এ নীতি অনুযায়ী যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে একাধিক সম্ভাব্য কারণের ফলে, ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে বা ক্ষতির ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে কোনো একক কারণ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ঐ ক্ষতির জন্য সম্ভাব্য দায়ী সকলের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন এবং পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন।
অনুবাদক :
১. ইমরান হোসেন ইমন
নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ