বেলফোর বনাম বেলফোর
রেফারেন্স : [1919] 2 KB 571
জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড
বাদী : মিসেস বেলফোর
বিবাদী : মিস্টার বেলফোর
ঘটনা :
১৯১৫ সালে বেলফোর দম্পতি ছুটি কাটাতে সিলন (বর্তমানে শ্রীলঙ্কা) থেকে ইংল্যান্ড যান। ভ্রমণের মধ্যবর্তী সময়ে মিসেস বেলফোর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, মিসেস বেলফোর সম্মত হন যে তিনি (মিসেস বেলফোর) সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া অবধি ইংল্যান্ডেই অবস্থান করবেন। অন্যদিকে, মিস্টার বেলফোর সিলন (শ্রীলঙ্কা) ফিরে আসেন। মিস্টার বেলফোর তার স্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি সুস্থ হয়ে সিলন ফিরে না আসা অবধি প্রতিমাসে তার ভরণপোষণ বাবদ ৩০ পাউন্ড করে অর্থ পাঠাবেন। মধ্যবর্তী সময়ে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের অবনতি হলে মিস্টার বেলফোর অর্থ পাঠানো বন্ধ করে দেন। পরিশেষে, মিস্টার বেলফোর তার স্ত্রীকে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রস্তাব জানান এবং তারা আইনসম্মতভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, মিসেস বেলফোর তার প্রাক্তন স্বামী মিস্টার বেলফোরের বিরুদ্ধে ভরণপোষণ বাবদ অর্থ প্রদানের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ আনেন এবং মামলা দায়ের করেন।
ইস্যু :
১. মিস্টার বেলফোরের দেয়া প্রতিশ্রুতি আইনগত চুক্তি হিসেবে গণ্য হয়েছিল কি না?
২. বেলফোর দম্পতির মধ্যবর্তী চুক্তির কি আইনগত বাধ্যবাধকতা ছিল?
সিদ্ধান্ত :
নিম্ন আদালতে মামলাটি উত্থাপন করা হলে বিচারপতি সারগ্যান্ট, মিসেস বেলফোরের পক্ষে রায় প্রদান করেন এবং আদেশ প্রদান করেন যে, মিস্টার বেলফোরকে অবশ্যই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ভরণপোষণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে। মিস্টার বেলফোর উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আদালতে আপিল করেন।
বিচারক ওয়ারিংটন, ডিউক এবং অ্যাটকিন – এর সমন্বয়ে গঠিত আপিল বেঞ্চ উল্লেখ করেন, উক্ত চুক্তিটির কোন আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। বিচারক অ্যাটকিন বলেন, এখানে আইনি চুক্তি তৈরির কোন উদ্দেশ্য ছিল না বরং এটি ছিল দাম্পত্য জীবনের সাধারণ প্রতিশ্রুতির অংশ। মিস্টার বেলফোরের করা প্রতিশ্রুতির মাঝে কোনরূপ বিনিময় ছিল কিনা সে বিষয়েও বিচারক ওয়ারিংটন এবং ডিউক প্রশ্ন উত্থাপন করেন। বিচারক অ্যাটকিন এ বিষয়টিতে জোর দিয়েছিলেন যে, আইনি সম্পর্ক তৈরির বিষয়টি জনসাধারণের নীতির সাথে সম্পর্কিত।
সর্বশেষ বিচারকগণ এ সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে, পারিবারিক বা দাম্পত্যজীবনের কোন প্রতিশ্রুতির বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। ফলে মিসেস বেলফোরের দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়।
উক্ত মামলাটির সাথে প্রায়ই মেরিট বনাম মেরিট (১৯৭০) মামলার যোগসাজশ দেখানো হয়। তবে, মেরিট বনাম মেরিট মামলায়, যদিও তারা বিবাহিত ছিলেন তবে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার মুহূর্তে তারা একে পরের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। ফলশ্রুতিতে, মেরিট বনাম মেরিট (১৯৭০) মামলায় দুইপক্ষের মধ্যে সম্পন্ন চুক্তিকে পারিবারিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় নি বরং এটিকে একটি আইনত বৈধ চুক্তি হিসেবে বিবেচনা করে হয়েছিলো।
সর্বোপরি, বেলফোর বনাম বেলফোর মামলায়, মিস্টার বেলফোর কর্তৃক মিসেস বেলফোরকে দেয়া প্রতিশ্রুতিকে আইনি চুক্তি হিসেবে গণ্য করা হয়নি।
অনুবাদক :
১. মো. আতিকুর রহমান
নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ