লাক্সমুর মে বনাম মেসেঞ্জার মে ব্যাভারস্টক
রেফারেন্স : [1990] 1 All ER 1067
জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস
বাদী : লাক্সমুর মে
বিবাদী : মেসেঞ্জার মে ব্যাভারস্টক
ঘটনা :
বাদী মিস্টার এবং মিসেস লাক্সমুর মে, ফক্সহাউন্ড (শিয়াল শিকারি কুকুর) চিত্রিত দুটি ছোট পেইন্টিংয়ের মালিক ছিলেন। পেইন্টিংগুলো ১৯৪৮ সালে মিসেস লাক্সমুর মে – কে উপহার দেওয়া হয়েছিল। তারা পেইন্টিংগুলোকে কম মূল্যবান ধারণা করে সেগুলোকে তাদের বাড়িতে অবহেলিতভাবে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৮৫ সালে তারা তাদের বাড়ি পুনরায় সাজানোর পরিকল্পনা করেন। সে সময় তারা পেইন্টিংগুলো বিক্রির কথা ভাবেন এবং সেজন্য মেসেঞ্জার মে বেভারস্টক নামক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহায়তা চান, যারা ছিল আর্ট মূল্যায়ন এবং নিলাম বিষয়ক একটি সুপরিচিত স্থানীয় প্রতিষ্ঠান।
মিসেস জারেক, যিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের একজন সহকারী ছিলেন, তিনি ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। অন্যান্য শিল্পকর্ম পরীক্ষা করার পর তিনি ফক্সহাউন্ড ছবিগুলো দেখে অনুমান করেন যে সেগুলোর মূল্য ৩০ পাউন্ড। তবে তিনি ছবিগুলো “নিরীক্ষার জন্য” নিয়ে যান এবং বাদীদের জানান যে তিনি একজন উর্ধ্বতর পরামর্শকারীর মতামত নেবেন। পরে ছবিগুলো ৮৪০ পাউন্ডে নিলামে বিক্রি করা হয়। কয়েক মাস পরে ছবিগুলো পুনরায় ৮৮,০০০ পাউন্ডে বিক্রি করা হয়। জানা যায় যে ছবিগুলো বিখ্যাত শিল্পী জর্জ স্টাবসের আঁকা। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, বাদীপক্ষ উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
ইস্যু : বাদীপক্ষ কি ফক্সহাউন্ড ছবিগুলোর প্রকৃত মূল্য নির্ধারণের ব্যর্থ হওয়ায় যথাযথ সতর্কতার মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছিল?
সিদ্ধান্ত :
প্রাথমিক পর্যায়ে, বিচারিক আদালত বিবাদী প্রতিষ্ঠানকে অবহেলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে রায় প্রদান করেন। পরবর্তীতে, বিবাদীপক্ষ উক্ত রায়ের বিপক্ষে আপিল করলে আপিল আদালত পূর্বের রায় বাতিল ঘোষণা করেন এবং নিলামকারীরা তার দায়িত্বে অবহেলা করে নি বলে রায় প্রদান করেন।
অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান চিত্রকর্মগুলি “নিরীক্ষার জন্য” নিয়েছিল, কিন্তু উক্ত শব্দটি মূল্য নির্ধারণ বিষয়ক কোনো সুস্পষ্ট অর্থ প্রদান করে না। আদালত সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে, নিলাম প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব চিত্রকর্মগুলোর বিক্রয় মূল্যের ওপর মতামত প্রদান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। বাদীপক্ষের প্রত্যাশিত দক্ষতা এবং সচেতনতার মানদণ্ড অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কতটুকু প্রযোজ্য, সে বিষয়েও আদালত সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। আদালত জানান, দ্য মেসেঞ্জার মে ব্যাভারস্টক একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান, যা লন্ডনের নিলাম ঘরগুলোর মতো বড় কোন প্রতিষ্ঠান নয়। সেজন্য তারা সর্বোচ্চ মানদণ্ড অনুসরণের অন্তর্ভুক্ত নন। বিচারপতি স্লেড এই বিষয়টিকে সাধারণ চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে বিদ্যমান পার্থক্যের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ❝বিবাদীর প্রতিষ্ঠান শিল্পকর্মের জগতে একজন সাধারণ ব্যক্তি তুল্য, বিশেষজ্ঞ নয়। ফলশ্রুতিতে, তাদের দায়িত্বের মাত্রাও তুলনামূলক কম ছিল।❞
আপিল আদালত আরও উল্লেখ করেন যে, শিল্পীর পরিচয় অজানা হলে চিত্রকর্মের উৎস সম্পর্কে মতানৈক্য থাকতে পারে। অতএব, নিলামকারীরা যদি সততা এবং যত্ন সহকারে কাজ করে এবং প্রকৃত মূল্যবান কোন চিত্রকর্মের মূল্য অনুমান করতে ব্যর্থ হওয়া, তাহলে উক্ত কাজের জন্য তাদেরকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত করা উচিত নয়।
সংশ্লিষ্ট নীতি :
মামলায় “বোলাম টেস্ট” [বোলাম বনাম ফ্রাইর্ন হাসপাতাল পরিচালনা কর্তৃপক্ষ (১৯৫৭) মামলা হতে উদ্ভূত] নীতি প্রয়োগ হতে পারে, যদিও বিবাদী যথাযথ পেশাদারি দক্ষতা রাখে নি এবং যে যুক্তি বা বিচার-বিবেচনা একজন যোগ্য পেশাদার প্রয়োগ করতেন, তা প্রয়োগ করছে না।
অনুবাদক :
১. মো. আতিকুর রহমান
নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ