রসিকলাল ভাঘাজিভাই প্যাটেল বনাম আহমেদাবাদ পৌরসভা (১৯৮৫)

Rasikala v Ahmedabad Municipal Case FP BN

রসিকলাল ভাঘাজিভাই প্যাটেল বনাম আহমেদাবাদ পৌরসভা ও অন্যান্য

সাইটেশন : 1985 AIR 504

জুরিসডিকশন : ভারত

আপিলকারী : রসিকলাল ভাঘাজিভাই প্যাটেল
বিবাদী : আহমেদাবাদ পৌরসভা ও অন্যান্য

ঘটনা :

আপিলকারী, রসিকলাল ভাঘাজিভাই প্যাটেল,পূর্বে একটি সেলস ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের একজন সেলস অফিসার ছিলেন। উক্ত চাকুরিতে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে চরম অবহেলা, অসদাচরণ এবং অবৈধভাবে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ আনা হয়। আনীত সকল অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকুরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। চাকরিচ্যুত হওয়ার পরে তিনি ‘ভোক্তা ভাল্লাভ ধোলা কলেজ’, আহমেদাবাদ-এ নতুন চাকুরিতে যোগদান করেন। সেখানে চাকুরিকালীন অবস্থায় তিনি আহমেদাবাদ পৌরসভায় হেড ক্লার্কের চাকুরির জন্য আবেদন করেন। উক্ত আবেদনপত্রে শর্ত ছিল, যদি আবেদনকারী পূর্বে কোন চাকুরি করে থাকেন, তাহলে সেটি কেন ছেড়েছেন তার কারণ বিস্তারিতভাবে জানানো। তবে রসিকলাল, ইচ্ছাকৃতভাবেই তার পূর্বের চাকরি থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি গোপন করেন এবং জানান যে, বদলি জনিত কারণে উক্ত চাকুরি থেকে তিনি স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছিলেন। প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটিত হলে তাকে নতুন চাকুরি থেকেও বহিষ্কার করা হয়। আপিলকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শ্রম আদলত তার করা আবেদন খারিজ করে দেন। গুজরাট হাইকোর্টে করা রিট আবেদনও খারিজ করে দেয়া হয়। অতঃপর তিনি বিশেষ অনুমতির জন্য আবেদন করেন।

ইস্যু :
১. উক্ত পরিস্থিতিতে কি বিশেষ অনুমতির আবেদন গ্রহণযোগ্য?

সিদ্ধান্ত :

রসিকলালকে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লুকানোর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিলো, যে তথ্য প্রকাশিত হলে নিয়োগকারীর সিদ্ধান্ত ভিন্ন হতে পারতো। ফলশ্রুতিতে, ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৩৬ এর অধীনে আপিলকারীর বিশেষ অনুমতির আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয় এবং তার আবেদনটি খারিজ করে দেয়া হয়। আদালত রায় দেন যে, সত্য গোপন করা (suppresio veri) এবং মিথ্যা তথ্য প্রদান (suggestio falsi) উভয়ই অসদাচরণের অন্তর্ভুক্ত।

যদিও সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ অনুমতির আবেদন খারিজ করে দেন, তবে ‘নিয়োগকর্তার বিবেচনার অধিকার’ বিষয়ক দেয়া গুজরাট হাইকোর্টের রায়ের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। গুজরাট হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল যে, কর্মচারীর কোনো নির্দিষ্ট কাজ বা অবহেলাকে নিয়োগকর্তা ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য করতে পারবেন, এমনকি পরিষেবা বিধিতে যদি উক্ত আচরণ সম্পর্কে উল্লেখ নাও থাকে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই মতের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। সুপ্রিম কোর্ট জানান, নিয়োগকর্তার কাছে এমন ক্ষমতা থাকা উচিত নয় যে, তিনি পরিষেবা বিধিতে উল্লেখ না থাকা কাজ বা অবহেলাকে অসদাচরণ হিসেবে বিবেচনা করবেন। এই আইনি অবস্থান স্পষ্ট করার পর, বিশেষ অনুমতির আবেদনটি খারিজ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট প্রবাদ :

ন্যায়পরায়ণ বিচার প্রার্থীকে অবশ্যই পরিষ্কার হাতে আসতে হবে : উক্ত ম্যাক্সিমের অর্থ, যে ব্যক্তি ন্যায়বিচার চাইবে তাকে সেই বিষয়ে কোনো অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত থাকা যাবে না। যদি তার আচরণ অনৈতিক প্রমাণিত হয়, আদালত তার আবেদন খারিজ করে দেবেন।

সংশ্লিষ্ট আইন :

  1. ভারতীয় সংবিধান
    • অনুচ্ছেদ : ১৩৬

অনুবাদক :
১. রুদ্র জয়া

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ

Share