অলকার্ড বনাম স্কিনার (১৮৮৭)

Allcard v Skinner Case FP BN

অলকার্ড বনাম স্কিনার

সাইটেশন : [1887] 36 Ch. D. 145

জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড

বাদী : অলকার্ড
বিবাদী : স্কিনার

ঘটনা :

মিস অলকার্ড যখন প্রায় ৩৫ বছর বয়সে পৌঁছান, তখন তিনি নিজের জীবনকে সেবামূলক কাজে উৎসর্গ করার ইচ্ছা অনুভব করেন। তিনি “সিস্টার্স অফ দ্য পুওর” নামক একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হন এবং কয়েক বছর পর তিনি সেই সংস্থার একজন স্বীকৃত সদস্য হন। তিনি দারিদ্র্য, পবিত্রতা এবং আনুগত্যের নিয়ম মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। দারিদ্র্য সংক্রান্ত নিয়ম অনুযায়ী, একজন সদস্যকে তার সমস্ত সম্পত্তি হয় তার আত্মীয়স্বজন, গরিবদের বা সংগঠনকে দান করতে হবে, এবং এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাইরের কারও সাথে আলোচনা করা নিষিদ্ধ ছিল, যদি না সংঘের প্রধান মহিলা (লেডি সুপিরিয়র) অনুমতি দেন।

ফলস্বরূপ, সংস্থার প্রতি আনুগত্যের নিদর্শন হিসেবে তিনি একটি উইল তৈরি করেন, যেখানে তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সমস্ত পারিবারিক সম্পত্তি সংঘের প্রধান মহিলা মিস স্কিনার (বিবাদী) এর নামে উইল করে দেন। এছাড়াও, পরবর্তী কয়েক বছরে তিনি একই ব্যক্তির কাছে প্রায় ৭,০০০ পাউন্ডের উপহার প্রদান করেন।

তবে, প্রায় আট বছর পর তিনি সংঘ ত্যাগ করেন। সংঘ ত্যাগের পরপরই তিনি তার উইল বাতিল করেন, কিন্তু মিস স্কিনারের (বিবাদী) কাছ থেকে তার সম্পত্তি ফেরত পেতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আগে তিনি আরও ছয় বছর অপেক্ষা করেন।

ইস্যু :
১. বাদী কি অন্যায়/অনুচিত প্রভাবের (undue influence) অধীনে ছিল যখন তিনি উপহার দিয়েছিলেন?
২. দাবিটি কি অযথা বিলম্ব (laches) এবং মৌনসম্মতির (acquiescence) কারণে বাতিলযোগ্য?

সিদ্ধান্ত :

আপিল আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, উপহারটি অন্যায়/অনুচিত প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তারা বাদীর সংঘ, বিবাদী এবং তার ধর্মীয় উপদেষ্টার সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে এই প্রভাব অনুমান করেছিলেন।

এছাড়া, আদালত আরও উল্লেখ করেছেন যে, যদি তিনি তার উপহারের অর্থ ফেরত পেতে আগেই মামলা করতেন, এবং সেই অর্থ যদি সংঘের উদ্দেশ্যে ব্যয় না হয়ে থাকে, তাহলে তিনি অন্যায়/অনুচিত প্রভাবের ভিত্তিতে সফল হতেন। তবে, অযথা বিলম্ব এবং মৌনসম্মতি প্রদানের কারণে তার দাবি খারিজ করে দেয়া হয়। বাদীর বিলম্ব এবং তার উপহার ফেরত নেওয়ার কথা ভাবার পরও পদক্ষেপ না নেয়া, প্রমাণ করে যে তিনি বিবাদীকে সম্পত্তি রাখতে সম্মতি দিয়েছেন। ফলস্বরূপ, বাদী তার উপহার ফেরত পেতে পারেননি। ফলশ্রুততিতে, ইক্যুইটির একটি মূলনীতি “Delay Defeats Equity” (বিলম্ব ইক্যুইটিকে পরাজিত করে) এখানে প্রযোজ্য হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট নীতি :

১. অযাচিত বিলম্ব নীতি : অযাচিত বিলম্ব নীতি (The Doctrine of Laches) একটি আইনি নীতি যা কোনো পক্ষকে একটি দাবি বা অধিকার আদায়ে বাধা দেয়, যদি তারা সেই অধিকার দাবি করতে অযৌক্তিকভাবে বিলম্ব করে, যার ফলস্বরূপ বিপক্ষ পক্ষের ক্ষতি বা অসুবিধা হয়।

২. বিলম্ব ইক্যুইটিকে পরাজিত করে : এই আইনি মূলনীতি অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ইক্যুইটেবল প্রতিকার (যেমন নিষেধাজ্ঞা বা নির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন) চাইতে গিয়ে অযৌক্তিকভাবে বিলম্ব করে, তাহলে তারা সেই প্রতিকার পাওয়ার অধিকার হারাতে পারেন। আদালত ন্যায়বিচার এবং সময়ানুবর্তিতাকে অগ্রাধিকার দেয়, তাই অযৌক্তিক বিলম্ব একটি দাবিকে বাতিল করতে পারে, বিশেষত যদি এটি অন্য পক্ষের ক্ষতি করে বা বিষয়টি ন্যায়সঙ্গতভাবে সমাধান করা কঠিন করে তোলে।

সংশ্লিষ্ট আইন :

  1. চুক্তি আইন, ১৮৭২
    • ধারা : ১৬

অনুবাদক :
১. মো. আল আমিন

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণাপ্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ

Share