ওভারসিজ ট্যাংকশিপ (ইউ.কে) লি. বনাম মর্টস ডক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোং. লি. (১৯৬১)

Overseas Tankship v Morts Dock Case FP BN

ওভারসিজ ট্যাংকশিপ বনাম মর্টস ডক (ওয়াগন মাউন্ড : ১)

রেফারেন্স : [1961] AC 388

জুরিসডিকশন : অস্ট্রেলিয়া

বাদী : মর্টস ডক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোং. লি.
বিবাদী : ওভারসিজ ট্যাংকশিপ (ইউ.কে.) লি.

ঘটনা :

সিডনি হারবারে, মর্টস ডক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোং, লিমিটেড (বাদী), একটি ঘাটের মালিক এবং পরিচালক ছিল, যেখানে তারা জাহাজ মেরামতের কাজ করতো। কাজের বেশিরভাগই ঝালাই এবং পোড়ানো সংশ্লিষ্ট ছিল। ওভারসিজ ট্যাংকশিপ (ইউ.কে.) লিমিটেড (বিবাদী) মালিকানাধীন জাহাজ, ওয়াগন মাউন্ড বাদীর পরিচালিত ঘাটের পাশে নোঙর করা ছিল। জাহাজ মেরামতের কাজ করার সময়, ক্রুদের অবহেলায় একটি চুল্লির মুখ বন্ধ না করায় ফার্নেস অয়েল (বাঙ্কার তেল) চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

জাহাজ যাত্রা শুরু করার সাথে সাথে জোয়ারের কারণে উক্ত তেল মর্টসের ঘাটের কাছাকাছি জলে ভেসে গেছে, যেখানে তারা অক্সি-অ্যাসিটাইলিন টর্চ ব্যবহার করে ধাতু ঝালাই করছিল। ঝালাই কাজের স্থান থেকে একটি স্ফুলিঙ্গ ভেসে আসা তেলের উপর থাকা একটি কাপড় বা তুলার বর্জ্যে পড়ার সাথে সাথে মর্টসের ঘাটে আগুন ধরে যায়। আগুনের ফলে ঘাট ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ দাবি করে তারা ওভারসিজ ট্যাংকশিপ (ইউ.কে.) লিমিটেডের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

ইস্যু :
১. অগ্নিকাণ্ডের ফলে হওয়া ক্ষতির জন্য কি ওয়াগন মাউন্ড জাহাজের ক্রুকে কি দায়ী করা যেতে পারে?
২. আগুনে বাদীর মালিকানাধীন ঘাট ধ্বংস হওয়া কি বিবাদীর অবহেলার পূর্বানুমেয় পরিণতি ছিল?

সিদ্ধান্ত :

প্রিভি কাউন্সিল, বিবাদী ওভারসিজ ট্যাংকশিপ (ইউ.কে.) লিমিটেড এর পক্ষে রায় প্রদান করেন এবং উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতির জন্য ওভারসিজ ট্যাংকশিপ (ইউ.কে.) লিমিটেড দায়ী নন বলে জানান। আরো উল্লেখ করেন, যদিও তেল ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ক্রু -দের অবহেলা ছিল, তবুও আদালত এটি মনে করেন যে, পানিতে ছড়িয়ে পড়া তেল থেকে আগুনের সূত্রপাত হবে এটি একজন সাধারণ বিবেকবান ব্যক্তি ধারণা করতে পারেন না। ফার্নেস তেল, দাহ্য পদার্থ হলেও পানিতে জ্বলবে বলে আশা করা যায় না, তাই উক্ত ঘটনায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি ছিল দূরবর্তী এবং অসম্ভাব্য।

অতএব, যেহেতু তেল ছড়িয়ে পড়ার ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পূর্বানুমানযোগ্য ছিল না, সেহেতু বিবাদীকে ক্ষতির জন্য দায়ী করা যাবে না। তবে, যদি বাদী শুধু তেল ছড়িয়ে পড়ার কারণে সরাসরি ক্ষতির জন্য মামলা দায়ের করতেন, সেক্ষেত্রে বিবাদীকে দায়ী করা যেত।

এই রায়টি পূর্ববর্তী Re Polemis মামলার রায় থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল, উক্ত মামলায় অবহেলা জনিত দুর্ঘটনার সকল প্রকার প্রত্যক্ষ ক্ষতির জন্য অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হতো, এমনকি ক্ষতির বিষয়টি পূর্বানুমেয় না হলেও। তবে ওয়াগন মাউন্ড মামলায় আদালত একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেন, যেখানে বলা হয়, ক্ষতির দায়বদ্ধতা নির্ধারণে অবশ্যই অবহেলাজনিত কাজের ফলে সৃষ্ট ক্ষতির বিষয়টি পূর্বানুমেয় হতে হবে। এই মামলাটি ‘যৌক্তিক পূর্বানুমান‘ নীতির সূচনা করে, যা ইঙ্গিত দেয় যে, বিবাদী শুধুমাত্র সেই ধরনের ক্ষতির জন্যই দায়ী থাকবে, যা একজন সাধারণ বিবেকবান ব্যক্তির নিকট বিবাদীর কার্যকলাপের সরাসরি ফলাফল হিসেবে গণ্য হবে।


অনুবাদক :
১. মো. আতিকুর রহমান
২. রুদ্র জয়া
৩. মোহাম্মদ হান্নান

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ

Share