গোস্বামী শ্রী বল্লভলাজী বনাম গোস্বামী শ্রী মহালক্ষ্মী ভাউজি মহারাজ (১৯৬১)

Vallabhalaji v Bhauji Maharaj Case FP BN

গোস্বামী শ্রী বল্লভলাজী বনাম গোস্বামী শ্রী মহালক্ষ্মী ভাউজি মহারাজ

রেফারেন্স : 1962 AIR 356

জুরিসডিকশন : ভারত

বাদী : গোস্বামী শ্রী বল্লভলাজী
বিবাদী : গোস্বামী শ্রী মহালক্ষ্মী ভাউজি মহারাজ

ঘটনা :

অনিরুদ্ধলালজি, বল্লভাচার্য ভুক্ত মন্দিরগুলোর প্রধান হিসেবে, বিশাল সম্পত্তির মালিক ছিলেন। অনিরুদ্ধলালজি ১৯৩৫ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যুবরণ করেন, এবং মৃত্যুকালে তার স্ত্রী, মহালক্ষ্মী বাহুজি মহারাজকে রেখে যান। তার মৃত্যুর পর, তার পদ ও বিশাল সম্পত্তি প্রথা অনুযায়ী তার ভাই বা ভাইয়ের পুত্রদের মধ্যে যেকোনো একজনের কাছে উত্তরাধিকারসূত্রে যাওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু ১৯৪৬ সালে, মহালক্ষ্মী বংশধর হিসেবে একজনকে দত্তক গ্রহণ করেন। যা অনিরুদ্ধলালজির ভাইয়ের জন্য একটি আকস্মিক ঘটনা ছিল, তিনি বিশ্বাস করতেন যে, এই দত্তক গ্রহণ তাদের প্রথাগত রীতিনীতি এবং আইনগত নীতিগুলোর লঙ্ঘন। তিনি মহালক্ষ্মী বাহুজি মহারাজের দ্বারা করা দত্তক গ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করেন।

নিম্ন আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে বাদীপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। আপিলকারী (বাদী) দত্তক গ্রহণের বিরোধিতা করেন, দাবি করেন যে, এটি প্রথাগত রীতিনীতি এবং আইনগত নীতির লঙ্ঘন।

ইস্যু :
১. মহালক্ষ্মী ভাউজি মহারাজ কর্তৃক গৃহীত দত্তক কি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পালনকৃত প্রথাগত রীতিনীতি অনুযায়ী বৈধ ছিল?
২. যদি দত্তক গ্রহণ বৈধ হয়, তবে দত্তক সন্তান কি সম্পত্তি উত্তরাধিকারী হতে পারে?

যুক্তিতর্ক :

আপিলকারী যুক্তি প্রদান করেছেন যে, দত্তক গ্রহণটি প্রথাগত এবং আইনি উভয় দৃষ্টিতে অবৈধ। মাদ্রাজ মিতাক্ষরা আইনের অধীনে বিধবা যদি কোনো সন্তান দত্তক গ্রহণ করতে চান, তবে স্বামীর সপিণ্ডদের সম্মতি প্রয়োজন। যেহেতু স্বামীর সপিণ্ডদের সম্মতি ছিল না, তাই দত্তক গ্রহণটি প্রথাগত এবং আইনি উভয় ক্ষেত্রেই অবৈধ। আপিলকারী আরও যুক্তি প্রদান করেন যে, সন্তান দত্তক নেয়ার ক্ষেত্রে, যদি সম্ভব হয়, তাহলে দত্তক গ্রহীতার পিতার বংশ থেকে হতে হবে।

মহালক্ষ্মী ভাউজি মহারাজ দাবি করেন যে, তার স্বামী অনিরুদ্ধলালজি তাকে দত্তক নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। তিনি যুক্তি দেন যে, অনিরুদ্ধলালজি জীবদ্দশায় তাকে দত্তক গ্রহণের অধিকার দিয়েছিলেন। যদিও তিনি একটি নির্দিষ্ট ছেলেকে (বাদীর পুত্র) দত্তক নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তবে তিনি অন্য কাউকে দত্তক গ্রহণে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা দেননি।

সিদ্ধান্ত :

১. স্বামীর সপিণ্ডদের সম্মতির না নেয়ার কারণে দত্তক অবৈধ, এই যুক্তি আদালত প্রত্যাখ্যান করেন। আদালত জানান যে, সপিণ্ডদের সম্মতি প্রয়োজন নয়, কারণ অনিরুদ্ধলালজি তার জীবদ্দশায় মহালক্ষ্মী ভাউজি মহারাজকে দত্তক নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন, যা একটি চিঠি এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত, যেটি ১১৫ নং নমুনাতে উল্লেখ করা হয়েছে।

২. দত্তকপুত্র অবশ্যই দত্তক গ্রহণকারীর পিতার পরিবারের সদস্য হতে হবে, বাদীর এরূপ দাবির পক্ষে আদালত কোন প্রকার প্রমাণ খুঁজে পান নি। সাক্ষীদের দ্বারা উপস্থাপিত গোদা দত্তক গ্রহণের প্রথাগুলিতে এমন বাধ্যবাধকতার কোন প্রমাণও পাওয়া যায় নি।

৩. সুপ্রিম কোর্ট উচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে যে, অনিরুদ্ধলালজি বাদীর পুত্র ছাড়া অন্য কাউকে দত্তক নেওয়ার বিষয়ে কোনো পরোক্ষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন, তা প্রমাণিত হয়নি। বাদীর উত্থাপিত প্রমাণাদি উক্ত দাবি প্রমাণের জন্য অপর্যাপ্ত ছিল।

৪. আদালত স্বীকৃতি প্রদান করেন যে, মহালক্ষ্মী ভাউজি মহারাজ তার স্বামীর প্রদত্ত অধিকার অনুযায়ী কাজ করেছেন। যা তার পছন্দসই একজন দত্তকপুত্র গ্রহণ বিষয়কে স্বীকৃতি দেয়।

৫. যেহেতু দত্তক গ্রহণ বৈধ ছিল, তাই দত্তকপুত্র অনিরুদ্ধলালজির সম্পত্তি উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়ার অধিকারী।

সুপ্রিম কোর্ট বাদীর দায়ের করা আপিল খারিজ করে দেন। আদালত রায় প্রদান করেন যে, দত্তক গ্রহণ বাতিল করার জন্য উপস্থাপিত প্রমাণ যথেষ্ট নয় এবং বাদীর দাবিকৃত প্রথাগত বিধিনিষেধও প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।


অনুবাদক :
১. মো. আতিকুর রহমান

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ


Cite this Page:

OSCOLA

APA

Bluebook

Share