আর. বনাম ক্রিস্টি (১৯১৪)

R. v Christie (1914)

আর বনাম ক্রিস্টি

সাইটেশন : [1914] AC 545

জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস

বাদী : আর. (রেজিনা/রাষ্ট্র) (পরিচালক, জননিরাপত্তা বিভাগ)
বিবাদী : এলবার্ট ক্রিস্টি

ঘটনা :

এলবার্ট ক্রিস্টির বিরুদ্ধে ফ্রেডরিক বুচার নামক ৫ বছর বয়সী একটি ছেলেকে অশালীনভাবে শারীরিক লাঞ্ছনার (Assault) অভিযোগ আনা হয়। ছেলেটি দাবি করে যে, ক্রিস্টি তাকে খেলার মাঠে শারীরিক লাঞ্ছনা করেন। কিছুক্ষণ পরই, ছেলেটির মা এবং একজন পুলিশ কন্সটেবল ছেলেটিকে খুঁজে পায় এবং সেই মাঠে নিয়ে যায় যেখানে ক্রিস্টি উপস্থিত ছিল। ছেলেটি ক্রিস্টির দিকে ইশারা করে বলে, “এ-ই সেই লোক”। যখন জানতে চাওয়া হয়, “সে তোমার সাথে কি করেছে?” ছেলেটি বিস্তারিতভাবে শারীরিক লাঞ্ছনার বর্ণনা তুলে ধরে। জবাবে ক্রিস্টি বলেন, “আমি নির্দোষ”। ছেলেটি শিশু আইন, ১৯০৮ এর ধারা ৩০ এর অধীনে ‘শপথবিহীন সাক্ষ্য’ দেয়, যার অর্থ, কোন আনুষঙ্গিক প্রমাণ ছাড়া তার দেওয়া উক্ত বক্তব্য প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট নয়, অর্থাৎ, এটি অন্য আরও প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত হতে হবে।

ছেলেটির সাক্ষ্য যাচাইয়ের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ছেলেটির মা এবং কনস্টেবলকে আদালতে আনে। বিবাদীপক্ষ যুক্তি দেয় যে এসব বক্তব্য কেবল শোনা-তথ্য (পরোক্ষভাবে প্রাপ্ত তথ্য) এবং নিশ্চিত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।

ইস্যু :
১. আদালতের বাইরে ছেলেটির দেওয়া বক্তব্য কি চিহ্নিতকরণের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য?
২. ছেলেটির বক্তব্য সম্পর্কে ছেলেটির মা এবং কন্সটেবলের দেওয়া সাক্ষ্য কি ছেলেটির শপথহীন সাক্ষ্যের “সমর্থন” হিসেবে গ্রহণযোগ্য?

যুক্তিতর্ক :

রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি:
রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি দেন যে, আদালতে ও মাঠে ক্রিস্টিকে চিহ্নিত করার সময় ছেলেটির দেওয়া বক্তব্য তার উপর শারীরিক লাঞ্ছনা প্রমাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরন্তু, ছেলেটির ক্রিস্টিকে চিহ্নিতকরণ এবং শারীরিক লাঞ্ছনা বিবরণ একই কার্যধারার অংশ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত, যা তার বক্তব্যকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। অভিযোগের সময় ক্রিস্টির আচরণও সন্দেহজনক হিসেবে দেখা যেতে পারে, বিশেষ করে যদি তার আচরণ (অভিযোগের সময় তার ব্যবহারে) দোষী হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। যেহেতু ছেলেটি শপথ গ্রহণের জন্য অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিল সেহেতু তার সাক্ষ্যের জন্য আনুষঙ্গিক আরো প্রমাণ প্রয়োজন ছিল, এবং এ বিষয়ে তার মায়ের ও কনস্টেবলের বক্তব্য তার বক্তব্যকে সমর্থন করেছে।

বিবাদীপক্ষের যুক্তি: 
বিবাদীপক্ষ যুক্তি দেন যে, ছেলেটির আদালতের বাইরে দেওয়া বক্তব্যকে নিশ্চিত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। ছেলেটি তার মা ও কনস্টেবলকে যা বলেছিল তা কেবল শোনা-তথ্য, অর্থাৎ তারা শুধু ছেলেটির কথা পুনরাবৃত্তি করেছেন, স্বাধীন কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেননি। ক্রিস্টির অস্বীকার করাও কিছুই প্রমাণ করে না; কারণ নির্দোষ ব্যক্তিরাও স্বাভাবিকভাবে অভিযোগ অস্বীকার করে থাকে। আইন অনুযায়ী, শপথবিহীন শিশুর সাক্ষ্যের জন্য আরও শক্তিশালী আনুষঙ্গিক প্রমাণ (স্বাধীন প্রমাণ) প্রয়োজন ছিল, এবং ছেলেটির মা ও পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য বৈধ আনুষঙ্গিক প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয় না, কারণ তারা কেবল ছেলেটির কথাই পুনরাবৃত্তি করেছেন।

সিদ্ধান্ত :

আদালত রায় দেন যে, ছেলেটি ক্রিস্টিকে তাৎক্ষণিকভাবে চিহ্নিত করেছিল, এটি আদালতে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য। তবে নির্যাতন সম্পর্কে পরবর্তীকালে দেওয়া বিশদ বিবরণ গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ তা কেবল শোনা-প্রমাণ (পরোক্ষভাবে প্রাপ্ত তথ্য) হিসেবে বিবেচিত হয়। যেহেতু ছেলেটি শপথ নেওয়ার জন্য উপযুক্ত ছিল না, তাই আইন অনুযায়ী তার সাক্ষ্যকে সমর্থনের জন্য আনুষঙ্গিক অন্যান্য প্রমাণ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তার আগের বক্তব্য, যা তার মা ও পুলিশ কর্মকর্তা কেবল পুনরাবৃত্তি করেছিলেন, তা যথাযথ আনুষঙ্গিক প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয়নি।

আদালত রাষ্ট্রপক্ষের এই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন যে, ছেলেটির বক্তব্য ঘটনাটির একটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত। কারণ, সে ঘটনার মুহূর্তেই কথা বলেনি বরং কিছু সময় পর প্রশ্নের উত্তর হিসেবে কথাগুলো বলেছিলো। ছেলেটির সাক্ষ্যকে সমর্থনের জন্য পর্যাপ্ত নির্ভরযোগ্য প্রমাণ না থাকায়, ক্রিস্টির দণ্ডাদেশ বাতিল করা হয় এবং তিনি খালাস পান।

সংশ্লিষ্ট নীতি:

রেস গেসটা নীতি : যখন কোনো ঘটনা মূল ঘটনার সাথে এতোটাই ওতপ্রোত ভাবে সংযুক্ত থাকে যে, দুটি ঘটনাকে একটি ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা যায়, তখন তাকে রেস গেসটা বলে এবং তখন এটি প্রমাণ হিসেবেও গ্রহণযোগ্য। রেস গেসটা (Res gestae) হল (হিয়ারসে) hearsay নিয়মের একটি ব্যতিক্রম।

সংশ্লিষ্ট আইন :

  1. শিশু আইন, ১৯০৮ (ইংল্যান্ড)
    • ধারা : ৩০
  2. সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২
    • ধারা :

অনুবাদক :
১. ইশরাক আহসান খান

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ

Share