পিটার্স বনাম ফ্লেমিং (১৮৪০)

Peters v Fleming Case FP BN

পিটার্স বনাম ফ্লেমিং

রেফারেন্স : [1840] 141 ER 314

জুরিসডিকশন : যুক্তরাজ্য

বাদী : ফ্লেমিং
বিবাদী : পিটার্স

ঘটনা :

মামলাটি একজন নাবালককে কেন্দ্র করে, যিনি ছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং একজন বিশিষ্ট ব্রিটিশ সংসদ সদস্যের সন্তান। উক্ত পরিচিতি তার জন্য একটি বিশেষ সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান তৈরি করেছিলো। (তৎকালীন সময়ে অর্থাৎ ১৮৪০ সালে, “নাবালক” বলতে ২১ অনূর্ধ্ব ব্যক্তিদের বুঝাতো) উক্ত নাবালক বিভিন্ন বিলাসবহুল পণ্য ক্রয়ের সাথে যুক্ত ছিল, যার মধ্যে ছিল চারটি আংটি, একটি ঘড়ির চেইন, একজোড়া কোট পিন ইত্যাদি। যদিও পণ্যগুলো সে নিয়েছিলো তবুও উক্ত পণ্যগুলোর মূল্য পরিশোধে সে ব্যর্থ হয়।

বিক্রেতা, ফ্লেমিং, পণ্যের মূল্য আদায়ের লক্ষ্যে অভিযোগ দায়ের করেন এবং দাবি করেন, উক্ত মূল্য পরিশোধের বিষয়ে নাবালককে দায়ী করা উচিত। উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ প্রশ্নের উদ্ভব ঘটে যে, নাবালকের সামাজিক অবস্থান এবং কেনাকাটার সময়কার পরিস্থিতি বিবেচনায় উক্ত পণ্যগুলো কি তার জন্য “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” বলে বিবেচিত হবে কি না।

ইস্যু :

  1. একজন নাবালক কি আইনত কোনো চুক্তির জন্য দায়ী হতে পারে, বিশেষত যখন চুক্তিটি বিলাসবহুল সামগ্রী নিয়ে হয়?
  2. নাবালকের ক্রয়কৃত আংটি, কোট পিন এবং ঘড়ির চেইন ইত্যাদি বিলাসবহুল পণ্যগুলো কি আইন অনুযায়ী “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” হিসেবে বিবেচিত হবে এবং পণ্যগুলোর মূল্য পরিশোধের জন্য নাবলককে দায়বদ্ধ করা যাবে?

যুক্তিতর্ক :

বিচারক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, উক্ত পণ্যগুলো “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” এর অন্তর্ভুক্ত কিনা তা জুরি বোর্ড (বিচারকমণ্ডলী পরিষদ) নির্ধারণ করবেন। বিচারকমণ্ডলী পরিষদ সিদ্ধান্ত দেন যে, নাবলকের ক্রয়কৃত পণ্যগুলো “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” এর অন্তর্ভুক্ত।

বিবাদী পক্ষের আইনজীবী বলেন, একজন নাবালকের করা কোন চুক্তির কোনোপ্রকার আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। আইনের সাধারণ নীতি অনুযায়ী, “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” বিষয়ক চুক্তি ব্যতীত, কোন নাবালকের করা অন্য যেকোনো বিষয়ক চুক্তির কোন প্রকার আইনগত মূল্য নেই। তিনি আরো বলেন, যেহেতু, নাবালকের ক্রয় করা পণ্যগুলো কোন “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” এর অন্তর্ভুক্ত ছিল না, সেহেতু, প্রশ্নটি কখনই জুরি বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারণের বিষয় নয়।

এখানে আদালতের কাজ ছিল “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” কে সংজ্ঞায়িত করা। বিচারপতি ব্যারন পার্ক এর ভাষ্যমতে, ❝আক্ষরিক অর্থে, “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি“-র সংজ্ঞা শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি কোনো ব্যক্তির চাহিদা, পদমর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান বজায় রাখার জন্য দরকারি যেকোনো বস্তুকে বোঝায়।❞ অপরদিকে বিচারপতি, ব্যারন অ্যাল্ডারসন, এর সাথে যুক্ত করেন যে, ❝ক্রয়কৃত বস্তুগুলো কি শুধু সাজসজ্জার জন্য কেনা হয়েছিল? যদি তাই হয়, তবে সেগুলো “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি“-র সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। তবে যদি সেগুলো সত্যিকার অর্থে ব্যবহারের জন্য কেনা হয়ে থাকে, তবে সেগুলো “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” হতে পারে যদি তা নাবালকের বয়স, পদমর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী উপযুক্ত হয়।❞

সিদ্ধান্ত :

আদালত এ সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে, নাবালকের ক্রয়কৃত পণ্যগুলোর মধ্যে ঘড়ির চেইন এবং কোট পিন গুলো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অন্তর্ভুক্ত তাই উক্ত পণ্যগুলো কেবল শৌখিন সাজসজ্জা পণ্য হিসেবে বিবেচ্য নয়। অপরদিকে, অভিযুক্তের সামাজিক পরিচয় – সংসদ সদস্যের ছেলে এবং কেমব্রিজের ছাত্র – বিবেচনায় রেখে বিচারক কর্তৃক উক্ত মামলার সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য জুরি বোর্ডের নিকট পাঠানো একটি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ, অভিযুক্তের সামাজিক পরিচয় বিচারের রায়কে প্রভাবিত করতে পারতো। সর্বশেষ, আদালত কর্তৃক, নাবালকের ক্রয়কৃত বস্তুগুলোকে “অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি” হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তাকে অর্থ প্রদানের জন্য দায়ী করে রায় ঘোষণা করা হয়।


অনুবাদক :
১. মো. আতিকুর রহমান
২. রুদ্র জয়া

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণাপ্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ


Cite this Page:

OSCOLA

APA

Bluebook

Share