পাকালা নারায়ণ স্বামী বনাম এম্পেরর (১৯৩৯)

পাকালা নারায়ণ স্বামী বনাম এম্পেরর (১৯৩৯)

পাকালা নারায়ণ স্বামী বনাম এম্পেরর

সাইটেশন : (1939) 41 BOMLR 428

জুরিসডিকশন : বৃটিশ ভারত (বর্তমান ভারত)

আপিলকারী : পাকালা নারায়ণ স্বামী (নিম্ন আদালতে বিবাদীপক্ষ)
বিবাদী : এম্পেরর [রাষ্ট্র] (নিম্ন আদালতে বাদীপক্ষ)

ঘটনা :

২৩ মার্চ, ১৯৩৭ তারিখে একটি ট্রেনের কামরায় স্টিলের ট্রাঙ্কের ভিতর হতে সাতখণ্ডে বিভক্ত একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। অতঃপর, মৃতব্যক্তির স্ত্রী লাশটিকে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন যে, ভুক্তভোগী (মৃতব্যক্তি) বিভিন্ন সময়ে পাকালা নারায়ণের স্ত্রীকে টাকা ধার দিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন যে, ভুক্তভোগী ২১ মার্চে পাকালা নারায়ণের স্ত্রীর পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তার পাওনা টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগ করেন। ৪ এপ্রিল পুলিশের তদন্ত চলাকালীন সময়ে পাকালা নারায়ণ স্বীকার করেন যে, ২১ মার্চ ভুক্তভোগী (মৃতব্যক্তি) তার বাড়িতে এসেছিলেন, এবং ২২ মার্চ ট্রেনযাত্রার উদ্দেশ্যে তার বাড়ি ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু বিচারের সময় তিনি এই বক্তব্য অস্বীকার করেন।

স্টিল ট্রাঙ্কটি যেই দোকানে প্রস্তুত এবং বিক্রি করা হয়েছিল, সেই দোকানের দুইজন কর্মচারী সাক্ষ্য দেন যে, মৃতব্যক্তিকে যেই ট্রাঙ্কের ভিতরে পাওয়া গিয়েছে, সেটি তারা অভিযুক্তের (পাকালা নারায়ণের) কাছে বিক্রি করেছিলেন। একজন জেটকা (ঘোড়ার গাড়ি) চালক সাক্ষ্য দেন যে, ২৩ মার্চ তিনি তার গাড়িতে করে অভিযুক্তকে একটি ট্রাঙ্কসহ রেলস্টেশনে নিয়ে যান। অতঃপর পাকালা নারায়ণ ও তার স্ত্রী – খুন, খুনের ষড়যন্ত্র ও অপরাধ সংক্রান্ত প্রমাণাদি গোপন করার অভিযোগে অভিযুক্ত হন।

ইস্যু :
১. মৃতব্যক্তির স্ত্রীর বক্তব্য ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের ৩২ (১) ধারা অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য ছিল কি না।
২. পুলিশের তদন্ত চলাকালীন সময়ে অভিযুক্তের বক্তব্য, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬২ ধারা অনুযায়ী অগ্রহণযোগ্য ছিল কি না।

সিদ্ধান্ত :

মৃতব্যক্তির স্ত্রীর বক্তব্য ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের ৩২ (১) ধারা অনুযায়ী মৃত্যুকালীন জবানবন্দি (Dying Declaration) হিসেবে গ্রহণযোগ্য বলে আদালত সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। মৃতব্যক্তির অভিযুক্তের স্ত্রীর সাথে দেখা করতে যাওয়া সংক্রান্ত বক্তব্য তার মৃত্যুর ঘটনাক্রমের পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত। বিচারপতি অ্যাটকিন বলেন, “এধরণের বক্তব্য প্রদানের সময় ব্যক্তির তার মৃত্যুর আশঙ্কায় থাক বা না থাক এবং তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কিত প্রশ্ন যে ধরনের মামলায় উত্থাপিত হোক না কেন, তা প্রাসঙ্গিক।” মৃত্যুর আশঙ্কার অভাবেই মৃত্যুকালীন জবানবন্দি (Dying Declaration) বাতিল হয়ে যায় না। বিচারপতি অ্যাটকিন আরও বলেন, “মৃত্যুর কারণ উদ্রেক হওয়ার আগেই বা মৃতব্যক্তির হত্যার আশঙ্কা করার কোন কারণ উদ্রেক হওয়ার আগেই বক্তব্যটি পেশ করা যেতে পারে।”

অন্যদিকে, পুলিশের তদন্ত চলাকালীন সময়ে অভিযুক্তের প্রদান করা বক্তব্যটি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬২ ধারা অনুযায়ী অগ্রহণযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়। তবে, অভিযুক্তকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণাদি আদালতের নিকট ছিল। মৃতব্যক্তি অভিযুক্তের বাড়িতে থেকেছিলেন। যেই ট্রাঙ্কের ভিতর মৃতব্যক্তির বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করা হয়, তা অভিযুক্ত কিনেছিলেন এবং রেলস্টেশনে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবং পরিশেষে, অভিযুক্ত তার অভিযোগ প্রত্যাখ্যানের পক্ষে কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতেও ব্যর্থ হন। ফলশ্রুতিতে, আদালত আপিল খারিজ করে দণ্ডাদেশ বহাল রাখেন।

সংশ্লিষ্ট আইন :

  1. ভারতীয় দণ্ডবিধি, ১৮৬০
    • ধারা : ১২০খ, ২০১, ৩০২
  2. সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ (ভারত)
    • ধারা : ৩২(১)
  3.  ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮
    • ধারা : ১৬২

অনুবাদক :
১. এস এম মনজুর মোর্শেদ

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ


Cite this Page:

OSCOLA

APA

Bluebook

Share