বাইর্ন বনাম ডিন (১৯৩৭)

Edmund Joseph Byrne Vs. Robert Heward Deane and Aletta Felicia Deane

এডমন্ড জোসেফ বাইর্ন বনাম রবার্ট হিউয়ার্ড ডিন এবং অ্যালেটা ফেলিসিয়া ডিন

সাইটেশন : [1937] 1 KB 818

জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস

বাদী: এডমন্ড জোসেফ বাইর্ন 
বিবাদী: রবার্ট হিউয়ার্ড ডিন এবং অ্যালেটা ফেলিসিয়া ডিন

ঘটনা :

বাদী, এডমান্ড জোসেফ বাইর্ন, ছিলেন সিফোর্ড হেড গলফ ক্লাবের একজন সদস্য। বিবাদীগণ, রবার্ট হিউয়ার্ড ডিন এবং অ্যালেটা ফেলিসিয়া ডিন, ছিলেন ক্লাবটির মালিক ও পরিচালক, একইসাথে মিসেস ডিন উক্ত ক্লাবের সেক্রেটারি দায়িত্বও পালন করতেন।

ক্লাবে “ডিডলার্স” নামক কিছু জুয়ার মেশিন ছিল, যেটি ক্লাবের সদস্যরা ব্যবহার করত। উক্ত মেশিন থেকে যে অর্থ লাভ হতো, তা বিবাদীগণের সঙ্গে ভাগ করে নেয়া হতো। পুলিশ উক্ত জুয়ার মেশিনের বিষয়ে অবহিত হলে, পুলিশের দেয়া নির্দেশ মোতাবেক মেশিনগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। পরদিন ক্লাবের এক দেয়ালে একটি বেনামি লিখা দেখা যায়, যাতে লেখা ছিল: “But he who gave the game away, may he burn in hell and rue the day,” যার অর্থ, “যে এই গেম ফাঁস করেছে, সে যেন নরকে পোড়ে এবং সেই দিনের জন্য অনুশোচনা করে।” এতে বোঝানো হচ্ছিল, কেউ একজন পুলিশকে মেশিনগুলো সম্পর্কে জানিয়েছিলো এবং ক্লাবকে সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলো। বাদীর অভিযোগ ছিল, ঐ লাইনগুলো তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা এবং এটি তার জন্য মানহানিকর। যদিও বিবাদীগণ উক্ত লাইনগুলোর লেখক ছিলেন না, তবুও বাদীর দাবি ছিল, তারা (বিবাদীগণ) এটি দেয়ালে প্রদর্শিত অবস্থায় রাখতে দিয়েছেন, ফলশ্রুতিতে মানহানির জন্য তারা দায়ী।

ইস্যু :
১. ক্লাবের দেয়ালে টাঙানো লিখাটি মানহানিকর অর্থ বহন করতে সক্ষম ছিল কি না?
২. লেখাটি প্রদর্শিত হতে দেওয়া মানহানিকর বক্তব্য “প্রকাশ” করার শামিল ছিল কি না।
৩. ক্লাবের মধ্যে বিবাদীগণের ভূমিকা ও কর্তৃত্ব বিবেচনায়, উভয় বা যে কোনও একজন বিবাদীকে এই “প্রকাশ” এর জন্য দায়ী ধরা যেতে পারে কি না।

যুক্তিতর্ক :

বাদীপক্ষের যুক্তি:
বাদী যুক্তি দেন যে, উক্ত লেখাটি এমন ইঙ্গিত বহন করে যে, তিনি জুয়া খেলার যন্ত্রগুলোর বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করে বিশ্বাসঘাতকের মতো আচরণ করেছেন, যা ক্লাবের সদস্যদের নিকট তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে। যদিও বিবাদীগণ উক্ত লেখাটি তৈরি বা টাঙাননি, তবুও তাঁরা ক্লাবের জায়গার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতেন। বিশেষ করে নারী বিবাদী ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী অননুমোদিত উপকরণ অপসারণের ক্ষমতা রাখতেন এবং তিনি স্বীকার করেছেন যে, তিনি সেই লেখাটি দেখেছিলেন। তবুও লেখাটি অপসারণ না করে দেয়ালে থাকতে দেওয়ার মাধ্যমে, বিবাদীগণ মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। বাদী হার্ড বনাম উড (১৮৯৪) [38 SJ 234] এবং ডি লিবেলিস ফামোসিস মামলার উদ্ধৃতি করে যুক্তি দেন যে, কোনো ব্যক্তির যদি কোনো বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান থাকে এবং নিয়ন্ত্রণের কর্তৃত্বও থাকে তারপরও যদি তিনি তা না করেন, তবে বিষয়টি তার দ্বারা “প্রকাশ” বা “publication” হিসেবে গণ্য হতে পারে।

বিবাদী পক্ষের যুক্তি: 
বিবাদীগণ দাবি করেন যে, তারা লেখাটি লেখেননি বা টাঙাননি, তাই উক্ত ঘটনার জন্য তারা দায়ী নন। তারা পুলম্যান বনাম হিল এবং অন্যান্য (১৮৯১) মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, মানহানিকর উপাদানের প্রকাশের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য পৌঁছানো প্রয়োজন, যা এই ক্ষেত্রে ঘটেনি। তারা আরও বলেন, অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে পুলিশকে জানানো একটি নাগরিক দায়িত্ব এবং এটি কারও সুনাম নষ্ট করে না বা কারও মানহানি করে না। জনাব ডিন বলেন, দেয়ালে লেখা টাঙানোর বিষয়ে তার সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ছিল না, কারণ ক্লাবের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে কমিটির উপর ন্যস্ত ছিল।

সিদ্ধান্ত :

বিচারিক আদালত:
বিচারিক আদালত রায় দেন যে, লেখার শব্দগুলো মানহানিকর ছিল, কারণ এটি বাদীকে ক্লাবের সদস্যদের কাছে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিত্রিত করেছে। আদালত আরও বলেন, বিবাদীরা ক্লাব প্রাঙ্গণের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতেন এবং লেখাটি না সরিয়ে তারা মানহানিকর উপাদান প্রকাশ করেছে। ফলে, বাদী এডমন্ড বাইর্নকে ৪০ শিলিং নামমাত্র ক্ষতিপূরণ এবং মামলার খরচ প্রদান করা হয়।

আপিল আদালত:
আপিল আদালতের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিগণ বিচারিক আদালতের রায়ের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তারা বলেন, লেখার শব্দগুলো মানহানিকর নয়, কারণ অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে পুলিশকে জানানো, কোনো ব্যক্তির সুনাম নষ্ট করে না বা “সমাজের সঠিক-চিন্তাশীল মানুষের” চোখে তাকে হেয় করে না। তাঁরা আরও বলেন, যদিও লেখাটি না সরানো প্রকাশ হিসেবে গণ্য হতে পারে, তবে জনাব ডিনের বিরুদ্ধে প্রকাশের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং মিসেস ডিনের বিরুদ্ধে খুবই সীমিত প্রমাণ ছিল। বিচারপতি গ্রিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, লেখাটি বিশ্বাসঘাতকতার ইঙ্গিত দেয় এবং এটি না সরিয়ে রাখা, প্রকাশ হিসেবে গণ্য। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আপিল মঞ্জুর করে, বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করা হয়।


অনুবাদক :
১. মো. আতিকুর রহমান
. রোজিনা আকতার নিশু

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ


Cite this Page:

OSCOLA

APA

Bluebook

Share