স্টার্জেস বনাম ব্রিজম্যান (১৮৭৯)

Sturges v Bridgman Case FP BN

স্টার্জেস বনাম ব্রিজম্যান

রেফারেন্স : [1879] 11 Ch D 852

জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস

বাদী : স্টার্জেস
বিবাদী : ব্রিজম্যান

ঘটনা :

স্টার্জেস (বাদী) ছিলেন একজন চিকিৎসক, যিনি উইম্পোল স্ট্রিটে একটি বাড়িতে উঠেন, যা ছিল ব্রিজম্যানের (বিবাদী) কনফেকশনারির (মিষ্টির দোকান) সংলগ্ন। ব্রিজম্যান বিগত বিশ বছর যাবৎ এই কনফেকশনারি পরিচালনা করছিলেন। স্টার্জেসের বাড়ির পেছনে একটি বাগান ছিল, যার প্রাচীর ব্রিজম্যানের রান্নাঘরের সীমানার সাথে সংযুক্ত ছিল। নতুন বাড়িতে উঠার পর, বাদী, বাগানটি সংস্কার করেন এবং পূর্বের দেয়াল অপরিবর্তিত রেখে উক্ত স্থানে একটি ছোট ব্যক্তিগত পরামর্শ কক্ষ (কনসালটিং রুম) তৈরি করেন। বিবাদী মিষ্টির বানানোর উপকরণ তৈরির জন্য তার রান্নাঘরে দুটি বড় মেশিন ব্যবহার করতেন। উক্ত মেশিন থেকে উৎপন্ন তীব্র শব্দ বাদীর নিজ সম্পত্তির শান্তিপূর্ণ উপভোগ এবং পরামর্শ কক্ষের কাজকে বিঘ্নিত করছিল।

ফলে বাদী অভিযোগ করেন যে, মেশিনের উৎপন্ন শব্দ তার জন্য উপদ্রব বা নুইসেন্স তৈরি করছে। তবে বিবাদী এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং যুক্তি দেন যে, তিনি কনফেকশনারিটি বিশ বছর যাবৎ পরিচালনা করছেন এবং বাদী ইচ্ছাকৃতভাবে এই ‘নুইসেন্স’ বা উপদ্রবের পাশে বসবাস করতে এসেছেন। অতএব তার ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। বিবাদী আরও বলেন যে, যদি কোনো দোষ থেকে থাকে, তবে তা বাদীর, তার নয়।

ইস্যু :
১. বিশ বছরের বেশি সময় যাবৎ নিরবচ্ছিন্নভাবে ব্যবহারের ফলে শব্দ উৎপন্নের বিষয়টি কি বিবাদী “প্রেসক্রিপটিভ রাইট” বা “ব্যবহার স্বত্ব দ্বারা আদায়কৃত অধিকার” হিসেবে দাবি করতে পারেন?
২. বিবাদীর “কামিং টু দ্য নুইসেন্স” (স্বেচ্ছায় উপদ্রবের মাঝে আসা) যুক্তি কি বাদীর দাবিকে বাতিল করতে পারে?

সিদ্ধান্ত :

আপিল বিভাগ বিবাদীর আপিল খারিজ করে দেন এবং তাকে উক্ত মেশিন বন্ধ করার জন্য আদেশ প্রদান করেন।

আপিল বিভাগ এ জানান, বাদী “উপদ্রবের পাশে এসেছেন” – এই যুক্তি কোনো প্রতিরক্ষা হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিচারপতি থেসিজার মন্তব্য করেন যে, বিবাদী দীর্ঘদিন যাবৎ কোনো অভিযোগ ছাড়াই কনফেকশনারি পরিচালনা করে আসছেন বলেই উক্ত বিষয়ে তার বৈধ অধিকার রয়েছে, এরূপ দাবি করতে পারবেন না। ‘প্রেসক্রিপশন রুল’ বা ‘ব্যবহার স্বত্ব দ্বারা আদায়কৃত অধিকার’ এর দাবি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, কারণ উক্ত নীতি কার্যকর করতে হলে বাদীকে ঐ উপদ্রব মেনে নিতে হবে। তবে, বাদী কখনোই শব্দটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য সম্মতি প্রদান করেন নি। এছাড়া, “কামিং টু দ্য নুইসেন্স” কোনো গ্রহণযোগ্য প্রতিরক্ষা নয়।

এছাড়াও, ‘নুইসেন্স’ বা ‘উপদ্রব’-এর বিষয়টি মূলত স্থানীয়তার উপর নির্ভর করে। যেমন: বেলগ্রেভ স্কয়ার (লন্ডনের একটি বেসরকারি আবাসিক এলাকা) যেখানে সবাই প্রবেশ করতে পারে না, সেখানে যে বিষয়টি নুইসেন্সের অন্তর্ভুক্ত, তা বারমন্ডসে (লন্ডনের একটি ব্যস্ত শিল্প এলাকা) নুইসেন্স হিসেবে গণ্য নাও হতে পারে। এক্ষেত্রে, স্থানীয়তার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী শব্দকে নুইসেন্স হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ফলশ্রুতিতে, আদালত বাদীর পক্ষে রায় দেন প্রদান করেন এবং কোনো প্রকার অযাচিত উপদ্রব ছাড়াই তার অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করেন।

প্রেসক্রিপশন রুল বা ব্যবহার স্বত্ব দ্বারা আদায়কৃত অধিকার নীতি :

উক্ত নীতিটি সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। এটি ব্যক্তিগত নুইসেন্স প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যেখানে অভিযোগকৃত কার্যক্রম ২০ বছরের বেশি সময় যাবৎ চলমান এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি তা জানলেও কোনো অভিযোগ করেননি। এই নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি নির্দিষ্ট কার্যক্রম ভবিষ্যতে চালিয়ে যাওয়ার আইনি অধিকার অর্জন করতে পারেন।


অনুবাদক :
১. রোজিনা আকতার নিশু

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ

Share