দ্য ফার্মাসিউটিক্যাল সোসাইটি অব গ্রেট ব্রিটেন বনাম বুটস ক্যাশ কেমিস্ট (সাউদার্ন) লিমিটেড
রেফারেন্স : [1953] EWCA Civ 6
জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস
বাদী : ফার্মাসিউটিক্যাল সোসাইটি অব গ্রেট ব্রিটেন
বিবাদী : বুটস ক্যাশ কেমিস্ট (সাউদার্ন) লিমিটেড
ঘটনা :
ফার্মেসি অ্যান্ড পয়জনস অ্যাক্ট, ১৯৩৩ এর ধারা ২৫ অনুযায়ী ফার্মাসিউটিক্যাল সোসাইটি অফ গ্রেট ব্রিটেনকে উক্ত আইনের প্রথম অংশে উল্লিখিত বিধানগুলি কার্যকর করার জন্য যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। আইনের ১৮(১)(ক)(iii) ধারায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল যে, পয়জন তালিকার প্রথম অংশে অন্তর্ভুক্ত কোনো বিষ নিবন্ধিত ফার্মাসিস্টের তত্ত্বাবধান ছাড়া বিক্রি করা যাবে না।
ওষুধ বিক্রি জন্য বিবাদী একটি নতুন ‘স্ব-পরিসেবা’ বা ‘সেলফ সার্ভিস’ পদ্ধতি চালু করেন, যেখানে ক্রেতারা দোকানের তাক থেকে যে যে ওষুধ প্রয়োজন তা বেছে নিতেন এবং কাউন্টারে এসে অর্থ প্রদান করতেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফার্মাসিউটিক্যাল সোসাইটি, ফার্মেসি অ্যান্ড পয়জনস অ্যাক্ট, ১৯৩৩ ধারা 18 এর (1)(a)(iii) উল্লিখিত নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বিবাদীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
বাদী যুক্তি দেন যে, একটি ‘স্ব-পরিসেবা’ পদ্ধতিতে দোকানের তাকে পণ্যসামগ্রী প্রদর্শনই (display of goods) “প্রস্তাব” হিসাবে বিবেচিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে। আর যেই মাত্র ক্রেতা তাক থেকে কোন পণ্য তুলবে সাথে সাথে উক্ত “প্রস্তাব গ্রহণ” করা হয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে, যা ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই একটি বাধ্যতামূলক চুক্তিতে আবদ্ধ করবে। একই সাথে, ‘স্ব-পরিসেবা’ প্রক্রিয়ায় ফার্মাসিস্ট থাকেন কাউন্টার স্থলে ফলে পণ্য পরিবেশনের জন্য ক্রেতার সামনে কোন নিবন্ধিত ফার্মাসিস্ট থাকেন না। তাই, দোকানের তাক থেকে ক্রেতা কোন পণ্যটি তুলেছেন সে বিষয়টি অজানা থেকে যায়। বাদীর মতে, উক্ত পদ্ধতিতে নিবন্ধিত ফার্মাসিস্টের তত্ত্বাবধান ছাড়া তালিকাভুক্ত বিষ বিক্রি হওয়ার একটি সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে যায়।
ইস্যু :
- ‘স্ব-পরিসেবা’ পদ্ধতিতে দোকানে পণ্যের প্রদর্শন কি চুক্তির “প্রস্তাব” হিসাবে বিবেচিত হবে নাকি “আহ্বান পত্র” হিসেবে বিবেচিত হবে?
- ‘স্ব-পরিসেবা’ পদ্ধতিতে একটি চুক্তি কখন সম্পন্ন হবে?
সিদ্ধান্ত :
হাইকোর্ট :
হাইকোর্টের কুইন্স বেঞ্চ বিভাগ, আসামির পক্ষে রায় দেন, কারণ আদালত মনে করেন যে একটি স্ব-পরিসেবা দোকানে পণ্যের প্রদর্শন একটি “আহ্বান পত্র” (invitation to treat) এবং তা “প্রস্তাব” (offer) নয়। স্ব-পরিসেবা হিসেবে বিজ্ঞাপিত হওয়া সত্ত্বেও এটি সাধারণ দোকানের থেকে আলাদা নয় বলে আদালত রায় দেন।
আপিল আদালত :
আপিল আদালত বিবাদীর পক্ষে দেয়া হাইকোর্টের রায়কে সমর্থন করে, উল্লেখ করেন, পণ্যের প্রদর্শনকে “প্রস্তাব” হিসেবে গণ্য করা যুক্তিসংগত নয়। বিচারকগণ আরও বলেন, যদি কোনো গ্রাহক কোনো পণ্য দোকানের তাক থেকে নেওয়ার পর তার মত পরিবর্তন করেন, আর শুধু পণ্য নেওয়াকেই যদি একটি বাধ্যতামূলক চুক্তি গঠনের জন্য যথেষ্ট ধরা হয়, তাহলে নানা সমস্যার উদ্ভব ঘটবে।
বিচারপতি বারকেট মন্তব্য করেন, ❝আমি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি যে, প্রথমত ক্রেতা কোন পণ্য তুলে নিলেই বিক্রয় সম্পন্ন হয় না। ক্রেতার ক্রয় প্রস্তাবটি বিনিময়-মূল্য গ্রহণের মাধ্যমে গ্রহণ না করা পর্যন্ত কোন বিক্রয় সম্পন্ন হয় না, এবং সেটি একজন ফার্মাসিস্টের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে।❞
তাই, আপিল আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, স্ব-পরিসেবা দোকানে পণ্যের প্রদর্শন একটি “আহ্বান পত্র” হিসেবে বিবেচিত হবে এবং ক্রেতা যখন কাউন্টারে মূল্য পরিশোধের প্রস্তাব দেবেন আর বিক্রেতার সেই মূল্য গ্রহণ করবেন তখনই শুধু চুক্তি সম্পন্ন হবে।
এই ক্ষেত্রে, যেহেতু বিবাদী কাউন্টারে একজন নিবন্ধিত ফার্মাসিস্টকে নিয়োজিত রেখেছিলেন, তাই বিবাদী কর্তৃক ফার্মেসি এবং পয়জনস অ্যাক্ট, ১৯৩৩ এর কোন ধারা লঙ্ঘন হয়নি। উপরন্তু, বিবাদী একজন নিবন্ধিত ফার্মাসিস্টের তত্ত্বাবধানে বিষ বিক্রির ক্ষেত্রে যথাযথ নজরদারি নিশ্চিত করেছিলেন। বিধায় আপিল আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট আইন :
- ফার্মেসি অ্যান্ড পয়জনস অ্যাক্ট, ১৯৩৩ (যুক্তরাজ্য)
অনুবাদক :
১. মোহাম্মদ হান্নান
২. ইমরান হোসেন ইমন
নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণাপ্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ