উইলশার বনাম এসেক্স এরিয়া হেলথ অথরিটি (১৯৮৮)

Wilsher v Essex Case Feature Photo BN

উইলশার বনাম এসেক্স এরিয়া হেলথ অথরিটি

রেফারেন্স : [1988] AC 1074

জুরিসডিকশন : ইংল্যান্ড

বাদী : উইলশার
বিবাদী : এসেক্স এরিয়া হেলথ অথরিটি

ঘটনা :

বাদী উইলশার, যিনি তখন শিশু ছিলেন, এসেক্স এরিয়া হেলথ অথরিটি হাসপাতালের অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রসব-পরবর্তী যত্ন নেওয়ার সময়, ওই হাসপাতালের একজন অনভিজ্ঞ জুনিয়র চিকিৎসক ভুলবশত শিশুটিকে (বাদীকে) অতিরিক্ত অক্সিজেন দেন। এর ফলে তিনি রেট্রোলেন্টাল ফাইব্রোপ্লাসিয়া (এটি একটি বিশেষ ধরনের অবস্থা যা বিভিন্ন কারণ বসত সময়ের পূর্বে জন্ম নেওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে ঘটে) রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্ধত্ব বরণ করেন। পরবর্তীতে হাউস অব লর্ডস তখন চিকিৎসা-সংক্রান্ত প্রমাণের ভিত্তিতে দেখতে পান যে, পাঁচটি সম্ভাব্য কারণ এই সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে। এর মধ্যে চারটি কারণ ছিল শিশুটির (বাদীর) অপরিণত জন্মের সঙ্গে সম্পর্কিত, আর পঞ্চম কারণ ছিল জুনিয়র চিকিৎসকের দেওয়া অতিরিক্ত অক্সিজেন।

ইস্যু : জুনিয়র চিকিৎসক কর্তৃক অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ করায় কি বাদীর অন্ধত্বের কারণ হয়েছিল?

সিদ্ধান্ত :

প্রাথমিকভাবে ❝ম্যাকঘি নীতির❞ উপর ভিত্তি করে বিচারক, এসেক্স এরিয়া হেলথ অথরিটিকে দোষী সাব্যস্ত করেন। “ম্যাকঘি বনাম জাতীয় কয়লা বোর্ড” মামলায়, ক্ষতির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করার জন্য অভিযুক্তকে দায়ী করা হয়েছিল। তাই, আপিল আদালত এই মামলায় “ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির নীতি” প্রয়োগ করেন এবং বলেন, চিকিৎসকের কাজ বাদীর (উইলশার) অন্ধত্বের জন্য অবদান রেখেছিল, কারণ এটি অন্ধত্বের পাঁচটি সম্ভাব্য কারণের একটি ছিল এবং প্রমাণের দায় বিবাদীর ওপর বর্তায়। তবে, এসেক্স এএইচএ পরবর্তীতে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাউস অব লর্ডস পর্যালোচনাপূর্বক নিম্ন আদালতের উক্ত রায় বাতিল ঘোষণা করেন।”

হাউস অব লর্ডস বিবাদীর পক্ষে রায় প্রদান করেন। আদালত জানান, ‘জুনিয়র চিকিৎসকের কার্যকলাপই ক্ষতির একমাত্র কারণ হয়েছিল’ উক্ত বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। ম্যাকঘি মামলায়, রোগের জন্য একমাত্র সম্ভাব্য কারণ ছিল ‘ইটের গুঁড়ো’। কিন্তু এই মামলায়, শিশুর অন্ধত্বের জন্য জুনিয়র চিকিৎসকের কার্যকলাপের পাশাপাশি আরও চারটি সম্ভাব্য কারণ রয়েছে।

লর্ড ব্রিজ অফ হ্যারউইচ উল্লেখ করেন যে, এটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করা যায়নি যে, জুনিয়র চিকিৎসকের অবহেলাই অন্ধত্ব বরণের একমাত্র কারণ ছিল। ফলশ্রুতিতে, বাদী পক্ষের উপর বিষয়টি প্রমাণে দায়িত্ব বর্তায় যে, চিকিৎসক কর্তৃক অতিরিক্ত অক্সিজেন প্রদানই অন্ধত্ব বরণের সর্বোচ্চ সম্ভাব্য কারণ। প্রকৃতপক্ষে অপর চারটি কারণের যেকোনো একটি থেকেও ভুক্তভোগীর ক্ষতি হয়ে থাকতে পরে। অতএব, বাদীপক্ষ অভিযুক্তের অবহেলা এবং উক্ত অবহেলার ফলস্বরূপ শিশুর অন্ধত্ব বরণ এর মাঝে সরাসরি যোগসাজশ প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হন।

❝ম্যাকঘি নীতি❞ কেবল তখনই প্রয়োগ করা যায়, যখন ক্ষতির একটি মাত্র কারণ থাকে এবং তা অভিযুক্তের কার্যকলাপের ফলে ঘটে। উপরন্তু, এই মামলার ক্ষেত্রে ক্ষতির জন্য পাঁচটি সম্ভাব্য কারণ ছিল। যেহেতু, শিশুর অন্ধত্বের প্রকৃত কারণ স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি সেহেতু বিবাদী, এসেক্স এরিয়া হেলথ অথরিটি,-কে দায়ী করা যাবে না, কারণ তাদের অবহেলার বিষয়টি অনেকগুলো সম্ভাব্য কারণের মাঝে একটি কারণ মাত্র।


অনুবাদক :
১. রুদ্র জয়া
২. মো. আতিকুর রহমান

নোট : The Case Summary আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ঘটনা ও রায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এই প্ল্যাটফর্মটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ আইনের ধারণা প্রদান করে না, আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু মাত্র মামলার সারাংশ নির্ভর হওয়াকে নিরুৎসাহিত করি। ধন্যবাদ

Share